0000

এক সময়ের প্রমত্তা সংকোশ এখন মরা খাল



সংকোশ একটি আন্তর্জাতিক নদী। নদীর প্রকৃতি সর্পিলাকার।  উত্তর ভুটানের কাঙ্গীনাথ পাহাড়ে এর উৎপত্তি। ভুটানে এই নদীর নাম পুনা সাং চু। সংকোশ নদীকে প্রবহমান রাখতে মো চু এবং পো চু নামের অপর দুটি নদীর ধারার প্রবাহ সক্রিয় রয়েছে। উৎপত্তিস্থল থেকে ভুটান অতিক্রম করে নদীটি পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলা হয়ে আসামে প্রবেশ করে। এরপর গোয়ালপাড়া জেলার (বর্তমানে কোকরাঝোর) পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ধুবড়ি শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার প্রবেশ করে। সেখানে নদীটির নাম তোর্সা। এরপর নদীটি আবারও ভারতে চলে যায়। সর্বশেষ নদীটি ভারত থেকে কুড়িগ্রামের কচাকাটা থানার শোভারকুটি সীমান্ত বাজারের পাশে উত্তর কাটাজেলাস, সাতানা গ্রাম দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

পরে এই সংকোশ নদী বল্লভের খাস ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ বাজারের পাশে গঙ্গাধর নদের সাথে মিলিত হয়। এই অংশে সংকোশ নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ১২ কিলোমিটার। 

খরস্রোতা এই নদীর গতিপথের দৈর্ঘ্য সামান্য হলেও এক সময়ে এর ভাঙন ছিল তীব্র। যে জায়গা দিয়ে প্রবাহিত হতো সেখানে চালাত তাণ্ডবলীলা। অব্যাহত ভাঙনের সঙ্গে পেছনে চর ফেলে সামনে অগ্রসর হওয়ায় গাবতলা, কচাকাটা, মাদারগঞ্জ অংশে প্রমত্তা শংকোষ এখন শুকিয়ে মরা খাল। অথচ একসময় শোভারকুটি, কচাকাটা বাজার, কাটাজেলাস, নাইকারহাট এলাকা থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা এই সংকোশ নদী দিয়ে যাত্রাপুর হাটে গবাদী পশু ও কৃষি মালামাল পরিবহন করতো। আর এখন বর্ষা মৌসুম বাদে বছরের বাকি সময় এর বুকে বিভিন্ন চাষাবাদ হয়। নদীতে পানি না থাকায় জেলে তার পেশা বদল করেছে।

আন্তঃসীমান্ত নদী হলেও ভারত এই সংকোশ নদীর ওপর একটি বাঁধ নির্মাণের জন্য ভুটান সরকারের সাথে ২০১১ সালে একটি চুক্তি করেছে। এখন ওই চুক্তি অনুযায়ী ১২ কিউসেক পানি ভারত প্রত্যাহারের ফলে সংকোশ নদীর এই মরণ অবস্থা কি না আমার জানা নেই। তবে বাংলাদেশ অংশে যে সংকোশ রয়েছে আমরা চাইলে সেটাকে বাচাতে পারি। অন্তত নদী দখলদারদের হাত থেকে সকোশ নদী সুরক্ষা করতে চাচ্ছি।

লেখা ও সম্পাদনা: জাহানুর রহমান খোকন, সংবাদকর্মী

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Back To Top