রাজারহাট উপজেলার ঠাটমারী বধ্যভূমি। ছবি: লেখক |
১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর(২৩ রমজান) শনিবার। কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ধর্মপ্রাণ মানুষ সেহেরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে, এমন সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত নিরস্ত্র-নিরীহ মানুষের ওপর গুলি চালাতে থাকে। সেদিন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরীহ ৬৯৭ জন মানুষকে হত্যা করবার পাশাপাশি গাবুরজান, বাগুয়া অনন্তপুর, রামখানা, নীলকন্ঠ, কলাতিপাড়া, শ্যামপুর, কামারটারী ও দাগারকুঠি গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেয়।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন বৃহত্তর রংপুর জেলায় যতোগুলো গণহত্যা সংগঠিত হয়েছিল, হাতিয়া গণহত্যা তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বড় গণহত্যা। স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও হাতিয়ার দাগারকুটি গ্রামে সংঘটিত গণহত্যা রাষ্ট্রিয়ভাবে পালন ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি। মুক্তিযুদ্ধের সময় কুড়িগ্রাম জেলার প্রায় সকল উপজেলায় কমবেশি সম্মুখযুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিল। এই জেলায় মোট বধ্যভূমির সংখ্যা ৮১টি। এরমধ্যে মাত্র ১৫টি বধ্যভূমি ও গণকবর এলাকা স্থানীয় ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। অধিকাংশ বধ্যভূমি ও গণকবর সংরক্ষণ না করায় এবং নদী ভাঙণের ফলে হারিয়ে গেছে। হাতিয়া বধ্যভূমির মতো জেলার অন্যান্য সব বধ্যভূমির একই চিত্র।
কাঁঠালবাড়ী বধ্যভূমি, কুড়িগ্রাম
১৯৭১ সালের ৯ জুন কুড়িগ্রাম শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে কাঁঠালবাড়ী বাজার ও আশপাশের গ্রাম পাকিস্তানি বাহিনী তিনদিক থেকে ঘিরে ফেলে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় কাঠালবাড়ী বাজার ও আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে। পাকবাহিনী তাদের দেশীয় দালালদের সহযোগিতায় হামলা চালিয়ে নিরপরাধ ৩৫ জন বাঙালিকে হত্যা করে। পরে সেখানে একটি বধ্যভূমি তৈরি করা হয়। কিন্তু বর্তমানে সেখানে যথাযথ পরিচর্যা নেই।
ঠাটমারী বধ্যভূমি, রাজারহাট
কুড়িগ্রাম-রংপুর সড়কের পাশে টগরাইহাট-রাজারহাট রেল ষ্টেশন এলাকার মাঝে ঠাটমারী ব্রিজ। ১৯৭১ সালে এই ব্রীজের পাশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিরাপত্তা রক্ষীদের জন্য ছোট্ট কোয়ার্টার ছিল। সেই কোয়ার্টারটিকে পাকিস্তানি আর্মিরা নারী ও পুরুষ নির্যাতনের সেল হিসাবে ব্যবহার করতো। রাজারহাট ঠাটমারী ব্রিজের কাছে ওই কোয়ার্টার ক্যাম্প ঘিরে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকসেনাদের সরাসরি যুদ্ধ হয়। সে লড়াইয়ে শহীদ হন ছয়জন মুক্তিসেনা। এরপর ঠাটমারী এলাকায় পাকসেনারা স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে। পাক সেনারা তাদের দোসরদের মাধ্যমে গ্রামের নারী ও পুরুষকে এ ক্যাম্পে এনে নির্যাতন চালাতো। পরে নির্যাতিতদের হত্যা করে রেল লাইনের পাশে গর্ত করে পুঁতে রাখতো। শহীদদের স্মরণে এ স্থানে তৈরি করা হয়েছে স্মৃতিফলক। কিন্তু বছরের অধিকাংশ সময় অযত্ন-অবহেলায় এই স্মৃতিফলক নেশার আসরে পরিণত হয়েছে।
সার্কিট হাউস বধ্যভূমি, কুড়িগ্রাম
৭ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা কুড়িগ্রাম শহরে প্রবেশ করে ব্যাপক গণহত্যা চালায়। ওই দিন বর্তমান সার্কিট হাউস সংলগ্ন কারাগারের সামনে নির্বিচারে গুলি চালালে পাঁচজন কারারক্ষী ঘটনাস্থলেই শহীদ হন। সেদিনের মতো পাক বাহিনী হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে চলে গেলেও ১৪ এপ্রিল তারা কুড়িগ্রাম শহরে পুনরায় প্রবেশ করে এবং স্থায়ীভাবে ঘাঁটি গেড়ে বসে। সেসময় তারা সার্কিট হাউসকে হত্যা ও নির্যাতন সেল হিসেবে ব্যবহার করে। এসময় সার্কিট হাউজে তারা পলাশবাড়ী থেকে ১৪ থেকে ১৫ জনকে ধরে এনে নির্যাতন শেষে হত্যা করে চলে যায়। এই বধ্যভূমিটি সার্কিট হাউস বধ্যভূমি নামে পরিচিত। এছাড়াও ৭ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনারা ফুড অফিসের সামনেও ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। ফুড অফিসের সামনে খনন করলে এখনো কিছু শহীদদের কঙ্কাল পাওয়া যাবে বলে স্থানীয়রা দাবী করেন।
বেলগাছার গণহত্যা, কুড়িগ্রাম
১৪ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী দ্বিতীয়বারের মতো রেলযোগে বেলগাছায় এসে নিরীহ মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায়। এসময় তারা সেখানকার অনেক মানুষকে ধরে এনে হত্যা করে। এখানে চেয়ারম্যান ডা. ছফর উদ্দিন, আলহাজ সজর উদ্দিন, আবদুল লতিফ, পোয়াতু মামুদ, বরিজ উদ্দিন, ভোলানাথ, সাহাবুদ্দিনসহ কয়েকজনকে হত্যা করে। তবে গণহত্যার জাগয়াটি দীর্ঘদিন সংরক্ষণ না করায় নতুন প্রজন্ম বেলগাছা গণহত্যার ইতিহাস ভুলতে বসেছে। পারিবারিক কবরস্থান।
ডাকবাংলো গণকবর, উলিপুর
মুক্তিযুদ্ধের সময় উলিপুর ডাকবাংলো ছিল পাক আর্মি বাহিনীর গণহত্যা ও নারী নির্যাতনের প্রধান কেন্দ্র। রেললাইনের ধারে অবস্থিত ডাকবাংলোয় মুক্তিযুদ্ধের সময় কেউ গিয়ে ফেরত এসেছে, এমন নজির নেই বলে লোকমুখে জানা যায়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মেজর শাহাবুদ্দিন এবং রাজাকাররা গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী ও শিশু মেয়েদের ধরে এনে এই ক্যাম্পে পাকিস্তানি বাহিনীকে উপহার দিতো। মেয়েদের তালাবদ্ধ ঘরে নির্যাতন ও ধর্ষণ করার পর বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাদের হত্যা করা হতো। তারপর রাজাকারদের দ্বারা ডাকবাংলোর আশপাশে গর্ত খুঁড়ে পুঁতে রাখত। স্বাধীনতার পর ডাকবাংলোর চারদিকে ৮-১০টি গণকববরের সন্ধান পাওয়া যায়।
মন্ডলেরহাট বধ্যভূমি, উলিপুর
১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে পাকিস্তানি বাহিনী উলিপুরের মন্ডলেরহাটে ‘অপারেশন’ চালিয়ে ২১ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে পাক বাহিনী চলে গেলে মন্ডলেরহাট বাজারের কাছে তাঁদের গণকবর দেয় স্থানীয়রা। তবে সেখানে নেই কোন বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ।
চর বেরুবাড়ি বধ্যভূমি, নাগেশ্বরী
১৯ নভেম্বর তিন প্লাটুন পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি গুলি বিনিময় হয়। গেরিলা মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর সাথে গুলি মোকাবেলা করতে করতে দুধকুমার নদীপাড়ে চলে আসে। পরে পাকিস্তানিদের ভারি অস্ত্রের কাছে টিকতে না পেরে দুধকুমার নদী পার হয়ে যে যার মতো গাঢাকা দেয়। ওইদিন তিন-চার ঘণ্টার যুদ্ধে উভয়পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটলে পাক আর্মি গোটা চর বেরুবাড়ি গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় এবং চর বেরুবাড়ি স্কুলে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পটির দখল নেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে তারা চর বেরুবাড়ি গ্রামে অগ্নিসংযোগ করে ১৫০ বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় এবং গ্রাম থেকে সব বয়সের ২৫০ জনকে বেরুবাড়ি বাজারে ধরে নিয়ে এসে নির্যাতন চালায়। পরে বেরুবাড়ি স্কুল মাঠের পিছনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ১৯ জনকে মেশিনগানের গুলিতে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে এবং অন্য সবাইকে কঠিন শাস্তি দিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে ওই স্থানে সামাজিক উদ্যোগে বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। তবে রাষ্ট্রিয়ভাবে বেরুবাড়ি গণহত্যা দিবস পালন না করায় বধ্যভূমিটি অবহেলা-অযত্নে পড়ে আছে।
নীলুর খামার বধ্যভূমি, নাগেশ্বরী
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ভূরুঙ্গামারী সড়ক থেকে ১ কিলোমিটার পশ্চিমে নীলুর খামার গ্রাম। ১৯৭১ সালের ১৮ নভেম্বর (২৬ রমজান)। এই গ্রাম থেকে ২ কিমি দূরে রায়গঞ্জ ব্রিজের পাশে পাকসেনারা অবস্থান গ্রহণ করেছিল। ওই দিন এই গ্রামের সদ্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন নওয়াজিশের নেতৃত্বে গ্রামের একটি বাড়িতে দুপুরের আহার গ্রহণ করছিলেন। খবর পেয়ে পাকসেনারা এই গ্রামে হামলা চালায়। ঘরবাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে একটানা গুলি করতে করতে তারা এগিয়ে আসতে থাকে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা গুলি চালান। কিন্তু তাদের গুলির পরিমাণ সীমিত থাকায় একপর্যায়ে তারা পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের ধরতে না পেরে পাকসেনারা গ্রামের নিরীহ লোকজনের ওপর এলোপাতাড়িভাবে গুলি করতে থাকে এবং একপর্যায়ে তারা অনেককে ধরে এই গ্রামের পাশে ঢড়কা বিলের তীরে বাঁশঝাড়ে নিয়ে হত্যা করে। এতে গ্রামের প্রায় ৭৯ জন শহীদ হন। পরে পাকসেনারা চলে গেলে গ্রামবাসীরা এসে এই শহীদের কয়েকটি কবরে মাটিচাপা দেন। এখানেও কোন বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নেই।
কোদালকাঠি বধ্যভূমি, রাজিবপুর
জেলা শহরের সাথে ব্রহ্মপুত্র নদ বিচ্ছিন্ন এক দ্বীপচর শংকর মাধবপুর। এই গ্রামে বীর প্রতীক তারামন বিবির জন্ম। বর্তমানে এটি রাজিবপুর থানার কোদালকাঠি ইউনিয়নের অন্তর্ভূক্ত। ১৯৭১ সালের ২৫ অক্টোবর রৌমারী থানা সদর থেকে আট-নয় মাইল দূরের কোদালকাঠি ইউনিয়নের এই গ্রামে পাক হানাদার বাহিনী হামলা চালিয়ে নিরস্ত্র-নিরীহ অর্ধশতাধিক বাঙালীসহ ২০০ থেকে ৩০০ মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে। কোদালকাঠি ইউনিয়নে সংগঠিত এক ভয়াবহ যুদ্ধে তাঁরা শহীদ হন। এরপর শংকর মাধবপুরের ওই স্থানটির পাল্টা দখল নিতে মুক্তিবাহিনী পরপর দুইবার সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। গণহত্যার শিকার এসব নিরীহ মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি হিসাবে আজও সেখানে কোন বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়নি।
বালাবাড়ি বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ, চিলমারী
১৯৭১ সালে বালাবাড়ি রেল স্টেশন সংলগ্ন কোয়ার্টারে পাক বাহিনী তাদের স্থায়ী ক্যাম্প করে বসে। স্থানীয় পঞ্চু রাজাকার ও তারসহযোগিরা মিলে পাক বাহিনীকে মুক্তিযোদ্ধাদের গতিবিধি সম্পর্কে অবগত করে। পরে ১৭ অক্টোবর কর্ণেল তাহের একদল মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে রেল স্টেশনের দখল নিতে একইসাথে চিলমারীর পাঁচটি স্থানে হামলা চালায় যা চিলমারী রেইড নামে পরিচিত। দিনব্যাপী যুদ্ধের পর বালাবাড়ি রেল স্টেশন মুক্তিবাহিনীর দখলে আসলে পাক বাহিনী আশেপাশের গ্রামে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পিছু হটতে থাকে। এই যুদ্ধে স্থানীয় নিরীহ প্রায় শতাধিক মানুষ শহীদ হন। পরে বালাবাড়ি রেল স্টেশন সংলগ্ন স্থানে তাদের গণকবর দেওয়া হয়। স্বাধীনতার পরে এখানে একটি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। তবে অযত্ন ও অবহেলায় এ স্থানটি বছরের অধিকাংশ সময়ে স্থানীয়রা ধান শুকানো, গোবর শুকানো কাজে ব্যবহার করে থাকে।
যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। সেই শহীদদের রক্তে ভেজা বধ্যভূমির সংরক্ষণে অবহেলা ও নজরদারির অভাবে দু:খজনক। মুক্তিযুদ্ধের শোক ও গৌরবের স্বাক্ষী বধ্যভূমিগুলো নতুন প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণের পাশাপাশি যেসব জায়গায় বধ্যভূমি নির্মাণ হয়নি সেসব জায়গায় বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত হোক।
জাহানুর রহমান
সম্পাদক, রৈখিক
5 মন্তব্যসমূহ
এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তোমাদের ভুলব না। রাজাকারের বাচ্চাদের ছাড়ব না।
উত্তরমুছুনহে মহান শহীদগণ, তোমাদের জানাই লাল সালাম।
উত্তরমুছুনএই মন্তব্যটি একটি ব্লগ প্রশাসক দ্বারা মুছে ফেলা হয়েছে।
উত্তরমুছুনস্বাধীনতার স্বপ্ন যারা
উত্তরমুছুনদেখেছিল চোখে
সুর্যটাকে নিয়ে এনেছে
রক্তমাখা বুকে।
মহান তারা, শ্রেষ্ঠ তারা
বাংলা প্রেমিক যারা,
তাদের কথা বলতে গিয়ে
আমি কাব্যহারা।
খোকন তুমি করেছো অনেক
মহৎ একটি কাজ
তোমায় দিলাম উপাধি আমি
মহান সাংবাদিকরাজ।
ধন্যবাদ৷ গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রসঙ্গে সকলকে অবহিত করা এবং দীর্ঘ বিরতির পর পুণরায় প্রকাশনা সচল করবার জন্য অভিনন্দন৷
উত্তরমুছুনমন্তব্য বিষয়ক দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় বহন করবে না।