0000

বর্ষবরণ || মরিয়ম মেরিনা

 



দিন,সপ্তাহ, মাস গড়ায়,বারো মাস পর পূর্বদিগন্তে উদিত নতুন দিনের নতুন জ্যোতিময় সূর্য। নবসূর্যের ঝর্ণাধারা উজ্জ্বল আলোয় শুচি স্নান করে প্রকৃতি।গাছে গাছে নতুন কলি,নতুন পাতা।মন প্রফুল্ল,কন্ঠে কন্ঠে নবদিনের বন্দনা।শঙ্খধ্বনিতে মুখোরিত চারিদিক।ঢাক-ঢোল,পান্তা-ইলিশ,শাড়ি-পাঞ্জাবি সংস্কৃতিধারাকে উপস্থাপন করেই নতুন বছরের অভিষেক।


চৈত্র মাসের শেষ,বৈশাখীর পহেলা দিবস।বাঙালির প্রানের উৎসব নববর্ষ।অতীতের সকল গ্লানি,দুঃখ-যন্ত্রণা,মুক্তি-চিন্তা,হতাশা ভুলে আনন্দঘন পরিবেশে সারাদেশে পালিত হয় নববর্ষ। সম্রাট আকবর ৯৩৬ হিজরী বাংলা সনের প্রবর্তন করেন।তখন থেকেই বাঙালি দিনটি পালন করে আসছে।


বাঙালি মেয়েরা শাড়ি,ছেলেরা পাঞ্জাবি পরে দেয় এ উৎসবে।এ উৎসবকে ঘিরে নতুন জামা-কাপড় কেনার ঢল নামে দোকানগুলোতে। শোভাযাত্রা এ উৎসবের একটি বড় অংশ।কেউ কেউ সং সেজে সেই শোভাযাত্রাকে আরো আকর্শনীয় করে তোলে।দিনটি ঘিরেই থাকে নানান উৎসবের আমেজ।কিংবা মাসজুরে থাকে নানা আয়োজন।


গ্রামীন আর শহুরে জীবনে মেলার ধরন আলাদা।প্রথমদিনটিকে কেন্দ্র করে শহরে আকর্ষনীয় শোভাযাত্রা, সং সাজে ঐতিহ্যকে তুলে ধরা,রমনার বটমূলে,পান্তা-ইলিশ,সভা-সমাবেশ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 

অধিকাংশ গ্রামেই থাকে এ উৎসবকে ঘিরে মাসব্যাপী আয়োজন।সার্কাস,বায়োস্কোপ,ঘোড়দৌড়সহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলোর আয়োজন থাকে।থাকে গ্রামীন বাংলার পালাগান,জারিগান,সারিগান ভাটিয়ালী সহ নানান আয়োজন।

এছাড়াও দোকানে দোকানে নতুন নতুন সাজ।পুরাতন হিসাবের পুরাতন খাতা রেখে উন্মোচন হয় নতুন খাতার।আর একে ঘিরেই হালখাতার উৎসব।


আয়োজন থাকে পূর্ণমিলনের,মেঘের কাছে জল ভিক্ষা, দরিদ্র ভোজন,নৃত্য-গীতে,সভা-সমিতিতে,আতিথেয়তায় মহিমাময়।


তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় অনেক আয়োজন চাকচিক্যময় জগতে আজ বিলীন পথে।

কোথাও বা দেখা যায় সীমিত পরিসরে। 


'হে নতুন,

এসো নতুন সম্পূর্ণ গগন পূর্ণ করি

পুঞ্জ পুঞ্জ রুপে।'

-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Back To Top