নদীমাতৃক এই দেশ আমার, হারাচ্ছে তার প্রাণ,
দূষণ, ধোঁয়ায় যেনো বিষাক্ত নাভিশ্বাস।
ইটের ভাটা, কয়লার ধোঁয়া, পলি আর প্লাস্টিকে
যেনো গড়ছে কার্বন নামের বোমা,
নদী-মাটি, গাছ-পালা, ফুল-ফল সব হারাচ্ছি আজ।
এ ক'বছরে হারিয়েছি কত নদী,
কত পথ, ঘাট, বিল, হাওর!
হারাচ্ছি কত কাক-পক্ষী, কেঁচো-ব্যাঙ, বাবুই-ময়না-টিয়া।
শত শত নদী আজ বালুচর আর খেলার মাঠ।
যেমন, ধলেশ্বরী হারিয়েছে তার যৌবন।
ধরলা, টাঙ্গন, পুনর্ভবার প্রেমে আজ প্রাচীর বেধেছে,
আত্রাইয়ের বুক চিঁড়ে ঠাই পেয়েছে গরু-গাড়ি।
বুড়িগঙ্গা, কর্ণফুলী আজ পলিথিনের অট্টালিকা,
হারিয়ে যাচ্ছে পোয়া, টাকি, খলসে আর টেঙরা-পুঁটি।
হারিয়ে যাচ্ছে মৌ-শিল্পীদের মধু মাখা ধারালো হাত!
মাটি-উর্বর শিল্পীরা আজ ধুঁকে মরছে কীটনাশকে,
শুনা যায় না সেই ঘ্যেঙর-ঘ্যঙ ধ্বনি।
ধ্বংস হচ্ছে পৃথিবীর চকরিয়া আর সুন্দরবনের মতো ম্যানগ্রোভ বনগুলো,
হারিয়ে যাচ্ছে তটে ভিড়া সেই কচ্ছপ-কুমির,
আর বেশি নেই হয়তো চিত্রা হরিণ আর প্রতিকী বাঘের পায়ের ছাপ।
খুঁজে পাই না এখন আর সেই আকাশী, কেওড়া, গরান আর গেওয়াগাছের চারাগুলো,
এ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে বাঁচতে পারছে না হিংস্র প্রাণী থেকে নর্দমার কীট পর্যন্ত।
প্রাণী-অরণ্যের শেকড় ভেঙ্গে যাচ্ছে আজ,
সূর্যে পড়েছে আবরণ।
নষ্ট হতে লাগলো প্রাকৃতিক ভারসাম্য,
নষ্ট হতে লাগলো প্রকৃতি আর মানব প্রেমের ধারা।
হারিয়েছি ঋতু, হারাচ্ছি মাস,
ফণী যেনো ফণা তুলে আসছে এবার,
তবুও যেনো টনক নড়ে না কারো।
যারা বুঝে না নদী অরণ্য আর প্রাণের সম্পর্ক,
তাদের বলছি, বন্ধ করুন এই ধ্বংস খেলা,
নহিলে, দেশ, মাটি আর প্রাণগুলো হারাবে তার স্বকীয়তা।
আসুন, আজ এ দিনে আমরা শপথ করে বলি,
প্রাণ থাকিতে হারাবো না আর প্রকৃতি-প্রাণের মেলা,
মানচিত্র বদলে দিবো, থাকিবো অরণ্যে ঘেরা।
🪐চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
0 মন্তব্যসমূহ
মন্তব্য বিষয়ক দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় বহন করবে না।