বাংলাদেশ অংশে এই নদীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ তিলাই, ভূটামগ্রাম দিয়ে নদীটি বাংলাদেশ প্রবেশ করে। কাঁটাতারের ওপারে নদীটির পার্শ্ববর্তী ভারতীয় গ্রামটির নাম বেঙ্গল পাড়া। যা এক হাজার এক আন্তর্জাতিক পিলার থেকে একটু দক্ষিনে রামরাইকুটি অংশ দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
এক সময় কেদার নদীটি খরস্রোতা ছিল। সোনাহাট ব্রিজে নিচ দিয়ে যখন বড় বড় নৌকা চলত তখন ছোট ছোট পাল তোলা নৌকাগুলো এই কেদার নদী দিয়ে যাতায়াত করতো। বঙ্গসোনা হাট ইউনিয়ন, চর ভুরুঙ্গামারী ইউনিয়ন, তিলাই ইউনিয়ন হয়ে ৩ ইউনিয়নে নদীটির ব্যপ্তি ব্যবস্থা ছিল। যা বর্তমানেও ক্ষীণ স্রোত নিয়ে প্রবাহমান আছে।
দেশ বিভক্তির পর ভারত থেকে পালতোলা নৌকা আর এই নদী দিয়ে আসে না। উপারের সাথে যোগাযোগ কমে যেতে থাকে এপাড় বাংলার। ভারতীয় অংশে এই নদীটির উৎপত্তি নদী হল রাইডাক। অর্থাৎ কেদার নদীটি রাইডাক নদী থেকে প্রতি হয়েছে। অতঃপর এই নদীটি ঐতিহাসিক Elephant Apple Tree of Srimanta Sankardeva থেকে কিছু পানি গ্রহণ করে ভাটির দিকে খরস্রোত নিয়ে প্রবাহিত হয়। দীর্ঘদিন অযত্ন ও অবহেলায় প্রতিবছর নদীর তলদেশ ভরাট হতে থাকে। আস্তে আস্তে নদী তীরবর্তী অংশের জমির মালিক নদী দখলে নেমে পড়ে। নদীটি ক্রমে সরু হতে হতে প্রস্থে কমে যেতে থাকে। কেদার নদীটি বঙ্গসোনাহাট ইউনিয়নের ময়না তলা বাজার এলাকায় বহালকুড়ী নদী থেকে কিছু পানি সংগ্রহ করে। অর্থাৎ ময়নাতলা বাজারে এলাকায় বহালকুড়ী নদী কেদার নদীতে মিলিত হয়।
ভারতের বেঙ্গল পাড়া থেকে নেমে আসা নদীটি বাংলাদেশ অংশে বিশ কিলোমিটার অতিক্রম এরপর সোনাহাট ব্রিজের নিকটে তিরমনি ব্রীজ এলাকায় দুধকুমার নদের সাথে মিলিত হয়। এখনো সারা বছর কেদার নদীতে পানি থাকে। স্রোত কম হওয়ায় বর্ষা মৌসুমের পর স্থানীয় কিছু সংখ্যক লোককে নিয়ে একটি সুবিধাবাদী মহল নদীটিকে লিজ দেন। তারপর জাল দিয়ে নদীটি ঘিরে ফেলা হয়। সারা বছর চলে নদীতে মাছ উৎপাদন কিন্তু স্থানীয় লোকজন ও পেশাদার জেলেরা কেউ নদী মাছ ধরতে পারেনা। নদীটি খনন করা হলে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের অনেক কৃষি জমি এই নদীর পানি দিয়ে সেচ দেওয়া সম্ভব হবে। সেই সাথে তিনটি ইউনিয়নের যোগাযোগের সহজ একটি মাধ্যম তৈরি হবে। প্রভাবশালী মহলের নদী লিজ দেওয়া বন্ধ হলে, কেদার নদী স্থানীয়দের আমিষের চাহিদার যোগানদার হবে।
0 মন্তব্যসমূহ
মন্তব্য বিষয়ক দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় বহন করবে না।