আজ অব্দি আমার কোনো ফটোগ্রাফি নেই
তা নিয়ে যে আমার মন খারাপ হয় তা কিন্তু না
স্মৃতির ভারে বিশাল সম্পদশালী আমি
দারিদ্র্যতা যতো তা শুধু সুখের বেলায়
আপাতত এটুকু আমার, যা ঝুলে আছে জীর্ণ হাত উঁচিয়ে।
এক শীতের সকালে অফসেটে মোড়া গুটি কয়েক ভাঙা লেখা পেয়ে
অনেকটা দেরী করেছিলাম সিদ্ধান্ত নিতে;যাবো কি যাবোনা
দ্বিধায় পা জড়িয়ে বেড়িয়ে গিয়েছিলাম; তাও শীত শেষে
সেখানে পৌঁছা মাত্র সাংবাদিক ভাইয়েরা খটাখট
ক্যামেরায় ধরে ফেলেছিলেন আমাকে।
আর প্রপাতে ডোবা চোখ আঙ্গুল উঁচিয়ে বলেছিলো
সেই তো এলে ;এত দেরি করে!
বিশ্বাস করুন সেদিন মনে হয়েছিলো ওটা আঙ্গুল না
ফোরর্টি ফোর উইনচেষ্টারের একটা রাইফেল-শব্দগুলো কার্তুজ
সেসব কি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে!
চারপাশে চিকচিক করছিলো সোনামাখা রোদ
টিনের চালা থেকে শুরু করে গাছের পাতা পর্যন্ত
বার্ধক্যের ম্যাড়ম্যাড়ে ঝেড়ে
যৌবনের প্রথম বেলার মতো উজ্জ্বল সাজে ভাসিয়ে দিয়েছিলো চারপাশ
চারিদিকে প্রাণ আর প্রাচুর্য; আহা এইতো জীবন!
ঠিক তখন; ভাঙা পথ পেরিয়ে ছুটে আসা বাষট্টি বছরের এক বৃদ্ধ
ধপ্ করে এলিয়ে দিলো গা, একটা লাশ
যে কেবল তার নিঃশ্বাসের কৃপা প্রার্থী , তার শরীর জুড়ে
হাজার রকম দাসত্বের ঘা
পৃথিবী তাকে কতোভাবেই না নির্বোধ বানিয়েছে।
আমার সারাটা সময় যায় এমন সত্য সব মুহূর্ত বয়ে
রক্তের তরঙ্গে মুক্তির কল্লোল গর্জে
ধরে রাখতে চাই এসব অন্তর বিদারী চিল
বলুন; এইসব বেঁচে থাকা কি কোনো ফটোগ্রাফিতে ধরা পড়ে!
1 মন্তব্যসমূহ
কী যেন একটা অনুভূতি মনের ভিতরে নাড়া দিয়ে গেল। লেখিকাকে হৃদয়ের গভীরতর অঞ্চল থেকে ভালোবাসা জানাই।
উত্তরমুছুনমন্তব্য বিষয়ক দায়ভার মন্তব্যকারীর। সম্পাদক কোন দায় বহন করবে না।