0000

শামসুদ্দিন শিপনের কবিতা অভিশপ্ত সপ্তাহ


কোন এক মেঘ বর্ষার বুধবারের
বিষণ্ণ দুপুরে
এক অশুভ সূর্য তির্যক তাপ কালে—
কিঙবা কোন একদিন কুয়াশায় মুখ আড়াল করা 
কলঙকিত সূর্যাস্ত ক্ষণে
জন্ম নিয়েছিল এই অভিশপ্ত সপ্তাহ।

এরপর বুনে গিয়েছে
কয়েক লক্ষ সেকেন্ড ও শতাংশ কয়েক মিনিট
কিন্তু তবুও কি এড়াতে পেরেছি
হিমেল হাওয়ার শন শন শব্দ
গাছে গাছে শীতের মৃতপ্রায় পাতার
শির শির কাঁপন
আর ঘরে ঘরে শৈতদগ্ধ আত্মার ক্রন্দন 
যেখানে বার বার
জীবনের অস্থির চঞ্চলতা এসে দাঁড়িয়েছে থমকে।

বুধবারের পর ভেবেছি 
এইবার 
বৃহস্পতির টানে ফিরবে নীড়ে
বারুদের গন্ধে পোড়া বুলেট
বুকে গুজে দেব
কখন কোন অসতর্ক মুহূর্তে
দেখ ঝাঁঝরা করে রেখে গেছে 
আমার বুক।

তারপর শুক্রবার নির্বোধ
আকাশ অনেক নীল
রাত্রির অলসতা নেমে এসেছে চকিতে।
আমার দেহ হয়েছে
পাহাড়ে জন্মানো আগাছা
যেভাবে পারছি শোষন করে বাঁচছি, ভাঙছি ঝড়ে।

নিঃপাপ প্যাঁচার মতো 
মধ্য আঁধারে অপেক্ষা করেছে শনিবার
কবে এসে কপাল নিয়ে যাবে
যাবে ভাগ্যরেখা মুছে।
দু'হাতে তুলে মুনাজাত করছি 
তসবিহ গুণে ডাকছি প্রভু।
আমার অশুভ শনি, কেটে দেন
সহ্য হচ্ছে না চারপাশ 
অসহ্য হয়ে উঠছি এই আমি।

রবিবারের মেঘলা আকাশ
আর এক পাসলা বৃষ্টি 
খাল বেয়ে চলে গেছে নদীতে।
ভেবেছি মুছে গেছে জলে ভেজা সব অভিশাপ
কিন্তু, মীরজাফরের মতো বিশ্বাস নিয়ে
থেকে গেছে হৃদয়ে।
আর নিশ্চুপ হতাসায় উন্মোচিত হয়েছে
আমার প্রাণ।

অতঃপর ঘাস ফরিঙ নেচে গেয়ে
নিয়ে এলো সোমবার।
চায়ের কাপ ফসকে গেছে
শত অজুহাতের অভাবে।
বারে বার ব্যর্থ হয়ে
ফিরে গেছে লজ্জার গ্লানি নিয়ে।
ক্ষয়ে গেছে, খসে পড়ে 
পঙ্গু মনের চিরকালের বিরোধে।

নিয়ম মেনে পীর বেসে আসলো মঙ্গল
আয়ু কমে গেছে
যেন বেঁচে থাকা একটা তীব্র আকাঙ্ক্ষা। 
জরা আর মৃত্যুর রুপ নিয়ে
চির যৌবনময় পৃথিবী চায়
স্তব্ধ করে দিতে
এক সুপ্ত শান্তির চঞ্চলতায়।

আবার এসেছে বুধবার
শ্মশানে কাঠপোড়ানো আত্মার গন্ধ নিয়ে!
তবে, শেষ কি হবেনা কোনদিন
এই অভিশপ্ত এক একটি সপ্তাহ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

Back To Top